বিশাল মজুদ থাকা সত্ত্বেও কয়লা আমদানির দিকে দেশ


জ্বালানি বিভাগ জানিয়েছে বর্তমানে দেশের ৫টি খনিতে ৭ হাজার ৮০৩ মিলিয়ন টন কয়লার মজুদ আছে। এই মজুদ কয়লা দীর্ঘ সময়ের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায় কয়লাভিত্তিক যে কয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রয়েছে বা নিমার্ণাধীন রয়েছে। কিন্তু সরকার অগ্রাহ্য করে কয়লা উত্তোলন বাদ দিয়ে অযথা আমদানির পথে হেঁটে নষ্ট করছে দেশীয় সম্পদ।
জানা গেছে, দেশে কয়লার বিশাল মজুদ সত্ত্বেও দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া ছাড়া অন্য কোনো খনি থেকে কয়লা উত্তোলনে উদ্যোগি হয়নি সরকার। ১৯৮৫ সালের আবিষ্কার হওয়া খনিটিতে ৩৯০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদ থাকার কথা জানা যায়। বাণিজ্যিকভাবে ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে বড়পুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু করে সরকার। তা সত্ত্বেও খনির পাশেই স্থাপিত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। অর্থাৎ সেখান থেকে চাহিদার অর্ধেক কয়লাও উত্তোলন করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চাহিদার তুলনায় বড়পুকুরিয়া খনির সেন্ট্রাল বেসিন থেকে প্রতিবছর গড়ে ০.৮ লাখ টন কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে। যা বড়পুকুরিয়ার ৬২৫ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য খুবই কম। এরই মধ্যে পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে। এই কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় সব কয়লা ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : বেড়ায় উন্মুক্ত কয়লা বিক্রি, ঝুঁকিতে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ
এদিকে ১৯৯৫ সালে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের দীঘিপাড়া কয়লা খনি আবিষ্কৃৃত হয়। জ্বালানি বিভাগের তথ্য বলছে, এই খনিতে প্রায় ৭০৬ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদ রয়েছে। ১৯৯৭ সালে আবিষ্কৃত হয় দিনাজপুরের ফুলবাড়ি কয়লা খনি। এই খনিতে মজুদ কয়লার পরিমাণ ৫৭২ মিলিয়ন টন। রংপুরের পীরগঞ্জের খালাসপীর এলাকায় ১৯৮৯ সালে আরেকটি কয়লা খনি আবিষ্কার হয়। এখানে ৬৮৫ মিলিয়ন টন কয়লার মজুদ রয়েছে। জয়পুরহাটে ১৯৬২ সালে জামালগঞ্জ খনি আবিষ্কার হয়। জামালগঞ্জ খনিতে ৫ হাজার ৪৫০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদ রয়েছে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বড়পুকুরিয়া খনির সেন্ট্রাল বেসিন থেকে কয়লা উত্তোলনে একটি জরিপ করা হয়েছে। সেই জরিপ অনুযায়ী, শুধু বড়পুকুরিয়া থেকেই বছরে প্রায় ১০ টন করে প্রায় ৩০ বছর ১৭০ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা যেতে পারে। দীঘিপাড়া কয়লা ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ একটি স্টাডি করে যে তথ্য পেয়েছে, তাদের মজুদ ৭০৬ মিলিয়ন টন কয়লা থেকে বার্ষিক তিন মিলিয়ন টন হারে প্রায় ৩০ বছরে ৯০ টন উত্তোলন করা যাবে। এ ছাড়া জামালগঞ্জ খনি থেকে প্রায় ৫ হাজার ৪৫০ মিলিয়ন টন এবং খালাসপীর ক্ষেত্র থেকে প্রায় ৬৮৫ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব।
দেশের খনিতে এত কয়লা মজুদ থাকার পরও কেন আমদানি করে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো হচ্ছে এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল আলম বলেন, শুধু কয়লা নয়, অন্যান্য জ্বালানিও আমদানিতে আগ্রহী সবাই। এলএনজি, জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের জ্বালানি আমদানিতে নীতিনির্ধারকদের আগ্রহ লক্ষ্যণীয়। এ কারণেই দেশের খনিজসম্পদ উত্তোলন ও তার সঠিক ব্যবস্থাপনায় চরম অবহেলা দৃশ্যমান। আমদানিতে নিশ্চয়ই কোনো লাভ আছে। তবে এ অবস্থা বেশি দিন চলতে থাকলে সামনে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। জ্বালানি সংকটে মুখ থুবড়ে পড়বে দেশ।
জ্বালানি বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, দেশের খনিজসম্পদ উত্তোলনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত খুব জরুরি। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত না এলে কয়লা উত্তোলন করা কঠিন। সে ক্ষেত্রে জ্বালানি চাহিদা পূরণে আমদানি করতেই হবে। তবে এখন দেশীয় খনিজসম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলনেও সরকার আগ্রাসী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। কারণ সামনের দিনগুলোতে প্রচণ্ড জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা রয়েছে।
ভয়েসটিভি/এমএম
জানা গেছে, দেশে কয়লার বিশাল মজুদ সত্ত্বেও দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া ছাড়া অন্য কোনো খনি থেকে কয়লা উত্তোলনে উদ্যোগি হয়নি সরকার। ১৯৮৫ সালের আবিষ্কার হওয়া খনিটিতে ৩৯০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদ থাকার কথা জানা যায়। বাণিজ্যিকভাবে ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে বড়পুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু করে সরকার। তা সত্ত্বেও খনির পাশেই স্থাপিত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। অর্থাৎ সেখান থেকে চাহিদার অর্ধেক কয়লাও উত্তোলন করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চাহিদার তুলনায় বড়পুকুরিয়া খনির সেন্ট্রাল বেসিন থেকে প্রতিবছর গড়ে ০.৮ লাখ টন কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে। যা বড়পুকুরিয়ার ৬২৫ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য খুবই কম। এরই মধ্যে পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে। এই কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় সব কয়লা ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : বেড়ায় উন্মুক্ত কয়লা বিক্রি, ঝুঁকিতে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ
এদিকে ১৯৯৫ সালে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের দীঘিপাড়া কয়লা খনি আবিষ্কৃৃত হয়। জ্বালানি বিভাগের তথ্য বলছে, এই খনিতে প্রায় ৭০৬ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদ রয়েছে। ১৯৯৭ সালে আবিষ্কৃত হয় দিনাজপুরের ফুলবাড়ি কয়লা খনি। এই খনিতে মজুদ কয়লার পরিমাণ ৫৭২ মিলিয়ন টন। রংপুরের পীরগঞ্জের খালাসপীর এলাকায় ১৯৮৯ সালে আরেকটি কয়লা খনি আবিষ্কার হয়। এখানে ৬৮৫ মিলিয়ন টন কয়লার মজুদ রয়েছে। জয়পুরহাটে ১৯৬২ সালে জামালগঞ্জ খনি আবিষ্কার হয়। জামালগঞ্জ খনিতে ৫ হাজার ৪৫০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদ রয়েছে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বড়পুকুরিয়া খনির সেন্ট্রাল বেসিন থেকে কয়লা উত্তোলনে একটি জরিপ করা হয়েছে। সেই জরিপ অনুযায়ী, শুধু বড়পুকুরিয়া থেকেই বছরে প্রায় ১০ টন করে প্রায় ৩০ বছর ১৭০ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা যেতে পারে। দীঘিপাড়া কয়লা ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ একটি স্টাডি করে যে তথ্য পেয়েছে, তাদের মজুদ ৭০৬ মিলিয়ন টন কয়লা থেকে বার্ষিক তিন মিলিয়ন টন হারে প্রায় ৩০ বছরে ৯০ টন উত্তোলন করা যাবে। এ ছাড়া জামালগঞ্জ খনি থেকে প্রায় ৫ হাজার ৪৫০ মিলিয়ন টন এবং খালাসপীর ক্ষেত্র থেকে প্রায় ৬৮৫ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব।
দেশের খনিতে এত কয়লা মজুদ থাকার পরও কেন আমদানি করে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো হচ্ছে এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল আলম বলেন, শুধু কয়লা নয়, অন্যান্য জ্বালানিও আমদানিতে আগ্রহী সবাই। এলএনজি, জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের জ্বালানি আমদানিতে নীতিনির্ধারকদের আগ্রহ লক্ষ্যণীয়। এ কারণেই দেশের খনিজসম্পদ উত্তোলন ও তার সঠিক ব্যবস্থাপনায় চরম অবহেলা দৃশ্যমান। আমদানিতে নিশ্চয়ই কোনো লাভ আছে। তবে এ অবস্থা বেশি দিন চলতে থাকলে সামনে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। জ্বালানি সংকটে মুখ থুবড়ে পড়বে দেশ।
জ্বালানি বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, দেশের খনিজসম্পদ উত্তোলনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত খুব জরুরি। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত না এলে কয়লা উত্তোলন করা কঠিন। সে ক্ষেত্রে জ্বালানি চাহিদা পূরণে আমদানি করতেই হবে। তবে এখন দেশীয় খনিজসম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলনেও সরকার আগ্রাসী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। কারণ সামনের দিনগুলোতে প্রচণ্ড জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা রয়েছে।
ভয়েসটিভি/এমএম
সর্বশেষ সংবাদ