নবজাতক হত্যায় নারীর যাবজ্জীবন


ফেনীতে নবজাতক হত্যার অভিযোগে এক নারীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। এ ছাড়া আদালত ওই আসামির ২০ হাজার টাকা জরিমানা-অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দন্ডপ্রাপ্ত নারীর নাম হনুফা বেগম (৪৩)। তিনি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মিজিয়া পাড়ার বাসিন্দা হলেও ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩ নং ব্যারাকে বসবাস করতেন।
৩১ জানুয়ারি সোমবার বিকেলে ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ কায়সার মো. মোশাররফ ইউছুপ এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
মামলার এজাহার ও আদালত সুত্র জানায়, ২০০৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে একটি নবজাতক ছেলে শিশুর লাশ মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে মর্মে তৎকালীন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফেনী থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন।
পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ফেনী সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা স্বামী পরিত্যক্তা নারী হনুফা বেগমের ফেনী হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় (মেডিকেল টেষ্ট) নবজাতকটি তার বলেই প্রতীয়মান হয়। অবৈধ মেলামেশায় গর্ভধারণ ও লোকলজ্জার ভয়ে তিনি নবজাতকটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশটি ওই স্থানে মাটি চাপা দেয়।
এ ঘটনায় ২০০৮ সালের ৩ মার্চ ফেনী থানার উপ- পরিদর্শক জাহাঙ্গীর উদ্দিন বাদী হয়ে ফেনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ফেনী মডেল থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাশেদ খান চৌধুরী তদন্ত শেষে আসামি হনুফা বেগমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোপত্র দায়ের করেন। আদালতে সাত জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
আদালতের ব্যাঞ্চ সহকারি রাজেন্দ্র কুমার ভৌমিক নবজাতক হত্যার দায়ে এক নারীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা-অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আসামি হনুফা বেগম জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তিনি যখন আদালতে অত্মসমর্পন বা গ্রেপ্তার হবেন তখন থেকে সাজা কার্যকর করা হবে।
ভয়েসটিভি/আরকে